পুলিশের নবাগতদের স্বাগতমঃ ক্ষমা করবেন দেশবাসী


ফরিদুল মোস্তফা খান, কারাগার থেকে ফিরে।

পাঠকের কাছে সাধারণ ডায়েরি। ক্ষমা করবেন টেকনাফ-কক্সবাজার তথা দেশবাসী। একই সাথে বাংলাদেশ পুলিশের কাছেও আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কারণ দেশ, মাটি ও মানুষের টানে সেই দিন আমি নিশ্চিত মৃত্যু সামনে নিয়ে বঙ্গকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত মাদকের জিরো টলারেন্স বাস্তবায়নে কলম বন্ধু হতে চেয়েছিলাম।

রক্ষা করতে চেয়েছিলাম মহান স্বাধীনতা ও করোনা যুদ্ধে দেশের মানুষের প্রাণ ছুঁয়ে নেয়া বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমুর্তি। চেয়েছিলাম, পর্যটন শিল্প রক্ষার পাশাপাশি টেকনাফ-কক্সবাজারে ঘটে যাওয়া খুন, গুম, হামলা, মামলা থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে। উদ্দেশ্য ছিল, মা বোনদের সম্ভ্রম রক্ষার। বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডে জড়িতদের শাস্তি নয়, সংশোধিত করে এই অঞ্চলে সত্যিকার মাদক নির্মূলে অতীতের মত প্রশাসনকে সাহায্য করতে।

কিন্তু দুর্ভাগ্য, বন্ধু হতে চেয়ে শত্রু বলে গণ্য করে মাদক নির্মূলের কথা বলে নিজেরাই মাদক সেবন ও বেপরোয়া বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়া টেকনাফের বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কক্সবাজার সদর মডেল থানার সাবেক ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার সিন্ডিকেট আমাকে ছাড়েনি। তাদের রোষানলে পড়ে নিজেই অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজির ৬টি মিথ্যা মামলার আসামী হয়েছি। জেল খেটেছি ১১ মাস ৫দিন। এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ইংরেজি তারিখ তারা ঢাকা থেকে রাতের অন্ধকারে তুলে এনে আমার উপর কি বর্বরতা চালিয়েছে তা সকলের জানা কথা…।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঋণ শোধরাবার নয়। কারণ সেদিন সচিবালয়ে গিয়ে তাঁর সহযোগিতা না পেলে নিশ্চিত ওরা আমাকে মেজর সিনহার মত ক্রস ফায়ার দিত। আসমান জমিনের মালিকের কাছে প্রার্থনা মন্ত্রী যেন প্রায় ১৮ কোটি মানুষের এই প্রিয় মাতৃভূমির জানমালের সঠিক নিরাপত্তা দিতে পারেন।

প্রিয় পাঠক, দুই দশকেরও অধিক সময়ের সাংবাদিকতা জীবনে আপনারাই সবচেয়ে বেশি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনেন ও জানেন।
তাই জনতার আদালতে আবেদন একটাই চার হাজার পিস ইয়াবা, দুটি দেশিয় তৈরি বন্দুক, দেশি-বিদেশি মদ-বিয়ারের কক্সবাজার সদর থানায় রুজুকৃত তিনটি মামলা এবং টেকনাফ থানায় রুজুকৃত ৩টি চাঁদাবাজি মামলার বাদী, স্বাক্ষী কারা? কার নির্দেশে, কেন এই মামলা গুলো রুজু হয়েছে? তদন্ত করে চার্জশীট দিয়েছেন কে? আমার অপরাধ কি? তাদের অপরাধ কি? খতিয়ে দেখে বিচার বিলম্বিত না করে আমার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেয়া হোক। অন্যথায় ওদের কি করতে হবে তা প্রিয় নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিচার বিভাগ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজি, চট্টগ্রাম রেঞ্জের নবাগত ডিআইজি, কক্সবাজার নবাগত পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টরা ভালই বুঝবেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই দেশের স্বার্থে গোয়েন্দা সংস্থা গুলো ভূমিকা রাখতে পারেন।

প্রগতিশীল তরুণ এক সাধারণ সাংবাদিক হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে আকুতি একটাই প্রয়াত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার বিচারটি অন্তত দেখতে চাই দুনিয়ার মানুষ। আমি ক্ষুদ্র অতি নগণ্য তাই নিজের বিচার না-ই বা চাইলাম। তবে আপনাদের বিবেকের কাছে ছেড়ে দিলাম এত গুলো মিথ্যা মামলার বোঝা সইব কেমনে? পরিবার পরিজন নিয়ে থাকবই বা কোথায়?

অনাগত ভবিষ্যতে দেশের জন্য আরো কিছু লিখার বাকি ছিল। সরকার পরিবেশ দিলে খুন, গুম, হামলা, মামলা যাই হোক না কেন জীবনের শেষ নিঃশ^াস পর্যন্ত সৃষ্টির কল্যাণে কাজ করতে চাই। সেই দিন ২৪ জুন ২০১৯ সালে টেকনাফের আইনশৃংখলা অবনতি, পরবর্তীতে টাকা না দিলে ক্রস ফায়ার দেন টেকনাফের ওসি শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করার পর প্রদীপ সিন্ডিকেটকে যারা উসকিয়ে ছিল আমি তাদের ক্ষমা করে দিলাম। কেননা রহমানের বান্দা তো তারাই যারা বেশি বেশি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

পরিশেষে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে লিখতে গিয়ে দীর্ঘ কারাজীবনে যে সব সম্মানিত ন্যায় বিচারক, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, মানবাধিকার সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী, কারা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ বিভিন্ন শ্রেণির পেশার দেশি-বিদেশি অগণিত পাঠক ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী, প্রদীপ বাহিনী, মাদক ব্যবসায়ী ও ঘুষ খোরদের যৌথ সিন্ডিকেটের নিশ্চিত হত্যা, জেল জুলুম, হামলা, মামলা , গুম, খুন থেকে রক্ষা করতে আমাদের নানা ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন আমরা আজীবন সেই মহান ব্যক্তিদের কাছে ঋণী এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিশেষ করে কক্সবাজারের মান্যবর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, বিদেশি বিভিন্ন সহকর্মী, সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটিসহ যারা দুঃসময়ে আমাদের পাশে ছিলেন মহান স্রষ্টার কাছে তাঁদের জন্য শুভ কামনা সব সময়। দোয়ার আর্জি। কলম চলবেই……! সত্য প্রকাশে আপনাদের প্রিয় ফরিদুল মোস্তফা খান মহান আল্লাহ ছাড়া কারো তাবেদারি করেনি, করবেনা কোন দিন। ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের নবাগত পুলিশ সুপার ও আট থানার ওসি সহ যেসব কর্মকর্তারা সদ্য যোগদান করেছেন, পৃথিবীর দীর্ঘ বেলা ভূমি কক্সবাজার থেকে আপনাদের সু-স্বাগতম। দয়া করে প্রদীপরা এই অঞ্চলে যা করে গেছেন তার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সেই প্রত্যাশাই রইল। মনে রাখতে হবে থানায় দালালি করার ইচ্ছা না থাকলে ফুল দিয়ে ওদের লাভ কি? চৌকিদার, দফাদার, কমিউনিটি পুলিশ সংশোধন করুন। আমরা আছি আপনাদের সাথে। পুলিশ জনতা, জনতাই পুলিশ।

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.